অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। আগামী ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তার দাখিল করা মনোনয়নপত্র শনিবার বাতিল করা হয়েছে বলে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজ বলছে, আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী জাতীয় আইনপরিষদের দুটি আসন— এনএ-১২২ (লাহোর) ও এনএ-৮৯ (মিয়ানওয়ালি) থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। শনিবার নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিয়েছে।
সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রীর মনোনয়নপত্র বাতিলের কারণ জানিয়ে রিটার্নিং অফিসার (আরও) বলেছেন, পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতাকে আদালত দোষী সাব্যস্ত করেছেন।
পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতা মিয়ান নাসির ইমরান খানের মনোনয়নের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সমর্থনকারী এবং প্রস্তাবক এনএ-১২২ আসনের অন্তর্ভুক্ত নন; যা আইনত এই আসনের হওয়া বাধ্যতামূলক।
তিনি আরও বলেন, এনএ-১২২ আসন থেকে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন ইমরান খান। কিন্তু তিনি একজন দণ্ডিত ব্যক্তি। তাই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানের ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থীদের দাখিল করা মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষ দিন আজ (৩০ ডিসেম্বর)। মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত আপিল করতে পারবেন প্রার্থীরা। আর ১০ জানুয়ারির মধ্যে এসব আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
যাচাই বাছাই এবং আপিলের শুনানি শেষে প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা ১১ জানুয়ারি প্রকাশ করবে ইসিপি। এছাড়া ১৩ জানুয়ারি নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। পাকিস্তানে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
৭১ বছর বয়সী সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খান গত বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর রাজনৈতিক ও আইনি লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির দায়ে গত আগস্টে দেশটির একটি আদালত তার তিন বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করেন। কারাগারে যাওয়ার পর থেকে তাকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি।
ইমরান খানের রাজনৈতিক দলের গণমাধ্যম শাখার কর্মীরা বলেছেন, এনএ-১২২ (লাহোর) আসনের পাশাপাশি ইমরান খানের নিজ শহর মিয়ানওয়ালি থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য দাখিল করা মনোনয়নও প্রত্যাখ্যান করেছে নির্বাচন কমিশন।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও বিভিন্ন জরিপে পাকিস্তানে ইমরান খানের ব্যাপক জনপ্রিয়তার চিত্র উঠে এসেছে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি পাকিস্তানের প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন। সামরিক বাহিনীই তাকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে চায় বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। যদিও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ইমরানের খানের করা এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
দেশটির একটি হাইকোর্ট ইমরান খানকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে দেওয়া রায় স্থগিত করতে অস্বীকৃতি জানানোর একদিন পর শুক্রবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট তাকে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁসের মামলায় জামিন দিয়েছেন।
Leave a Reply